বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৫২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি॥ আর ক’দিন পরেই পবিত্র ঈদুর ফিতর। সবাই ঈদের আনন্দে ব্যস্ত। ঈদকে নিয়ে কতই প্রস্তুতি। যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে কে কত নতুন জামা কিনতে পারে। বড়দের তুলনায় ছোট শিশুদের মাঝেই ঈদের আনন্দ বেশি। নতুন জামা ছাড়া ঈদই যেন চিন্তা করতে পারে না শিশুরা।
অন্যদিকে দরিদ্র-অসহায় পথ শিশুদের জুটছে না একটি জামাও। অন্যান্য শিশুদের মত তাদের মনে ঈদের আনন্দই নেই। একটি জামার অভাবে এই কোমলমতি পথশিশুদের মন খারাপ থাকে পবিত্র ঈদের দিনে। একটু চেষ্টা আর আন্তরিকতা নিয়ে এগোলেই পথ শিশুদের মুখে হাঁসি ফুটানো যায় একটি জামার বিনিময়ে।
মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, মার্কেটগুলো গিজ গিজ করছে ক্রেতাদের ভিড়ে। তাদের যেন চাহিদার শেষ নেই। অনেকে ১-২ টি জামা দিয়ে সন্তুষ্ট নয়। তাদের দরকার আরো ৪-৫ টি নতুন জামা। শিশু সন্তানের জন্য সেন্ডেল, প্যান্ট, শার্ট, ত্রি-পিচ, প্রসাধনি ছাড়াও কত কিছুই না কিনছে। আর অন্যদিকে সেই বয়সের পথ শিশুরা ছেড়া কাপড় অথবা খালি গায়ে কাধে বস্তা ঝুলিয়ে দিন-রাত হেটে যাচ্ছে কাগজ এবং প্লাষ্টিক কুড়াচ্ছে। মার্কেটের এই ব্যস্ততা, নতুন কাপড় যেন তাদের কাছে স্বপ্নের ব্যাপার। অনেক শিশুকে দেখা যায়, কিছুক্ষনের জন্য ব্যস্ত মানুষ আর বিপনী বিতানগুলোর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। যেখানে রয়েছে শিশুদের শার্ট, পেন্ট, অনেক কিছু। আবার দৃষ্টি ফিরিয়ে দু’ মুটো খাবার যোগাতে ব্যস্ত হয়ে উঠে কাগজ আর প্লাষ্টিক কুড়াতে।
জয়পাড়া কলেজের ছাত্র আশিক জানান, আমরা সবাই মা-বাবা ভাই বোন আত্মীয় স্বজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করবো। কিন্তু এই পথ শিশুরা কোথায় কার সাথে ঈদ করবে। এছাড়া একটি নতুন জামার অভাবে তাদের ঈদের আনন্দ ফিকে হয়ে যাবে। জয়পাড়া কলেজের আরেক ছাত্রী সায়মা আক্তার শিমুু জানান, তার অনেক বান্ধবী রয়েছে যারা ভারতীয় সিরিয়ালের নায়িকাদের গায়ে দেখা জামার ডিজাইনে ৫-৬ টি জামা কিনছে যা না হলে যেন ঈদের আনন্দ পাচ্ছে না। তাদের উদ্দেশ্যে সায়মা বলেন, আমাদের সমাজে এমনও অনেক মা-বোন রয়েছে যারা কোনভাবে ছেড়া কাপড় দিয়ে শরীর ঢাকছে। সকলের একটু মমতা, একটু ভালবাসার মাধ্যমে অসহায় মানুষগুলোর মুখে হাঁসি ফোটানো যাবে। চলুন সবাই অন্তত একটি নতুন জামা দিই। আর যারা নতুন জামা দিতে পারছেন না অন্তত পুরাতন ১টি জামাওতো দিতে পারি।
আমরা সবাই দেখি, আফসোস করি আবার কেউ এই বিষয়গুলো মেনে নিতে না পেরে নীরবে কান্না করি। অনেকে নিজেকে ধিক্কারও দেই এবং বলি আমরা কি পারবো না এই দেশ থেকে অভাব দূর করতে, কেন এমন হবে এই পথ শিশুদের জীবন, কেনো পারে না তারা স্বাভাবিক জীবন? অনেকে এসব প্রশ্নে উত্তর খুজছি। এই কথাগুলো আমরা সবাই কম-বেশি জানি এবং বুঝি। এরপরেও কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ায় না। চলুন সবাই সহযোগিতার হাত বাড়াই। আপনার দেখা দেখি অন্যরাও সহযোগিতা করবে।